
নিজস্ব প্রতিবেদক, নোয়াখালী
শেখ মুজিবের সুরাহা করা যুদ্ধাপরাধের নন ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে শেখ হাসিনা জামায়াতকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করেছিলো বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান।
তিনি বলেন, 'কোরআনের পাখি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মজলুম জননেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, শহীদ আবদুল কাদের মোল্লাদের খুনের দায়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বাংলার মাটিতে এনে তাকেও সেই ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হবে।'
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নোয়াখালী জিলা স্কুল মাঠে জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, শেখ হাসিনা বাংলার জমিনে অসংখ্য খুনের মাস্টার মাইন্ড। তিনি বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে বিগত ফ্যাসিবাদের যাত্রা শুরু করেছিল। তাকে আর কখনো রাজনীতিবিদ হিসেবে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হবে না। তিনি যতো অপকর্ম করেছেন তার বিচারের মুখোমুখি করতেই তাকে দেশে আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যায়। জীবন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে না। নিজেদের নেতাকর্মীদের শূন্য রেখে যারা দেশান্তরী হয়। তারা কখনো দেশ প্রেমিক হতে পারে না। যারা কঠিন সময়েও পালিয়ে না গিয়ে ফাঁসির মঞ্চকে বরণ করে নেয় তারাই প্রকৃত দেশ প্রেমিক।
মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, শেখ মুজিবের শাসনামলে ৭৪ সালে দূর্ভিক্ষ জনগণে ভোলেনি। আর শেখ হাসিনা ১০ টাকা কেজিতে চাল খাওয়াবে বলে কৃত্তিম দুর্ভিক্ষ তৈরি করে সপ্তাহের পর সপ্তাহ শ্রমিকদের না খাইয়ে উপোষ রেখেছিল এবং ঘরে ঘরে চাকরী দিবে বলে ঘরে ঘরে লাশ উপহার দিয়েছিল। এসবের ফায়সালা বাংলার মাটিতেই হবে।
তিনি বলেন, আমরা প্রশাসন, সাংবাদিক, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সকল নাগরিকের জন্য ইসলামিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত ওয়েল ফেয়ার এস্টেট বা কল্যাণকামী রাষ্ট্র গঠন করেতে চাই। এ রাষ্ট্র গঠনে নেতৃত্ব দেবে জামায়াতে ইসলামী। এজন্য আমরা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে গোটা দেশবাসীকে পেতে চাই।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে নতুন চাঁদাবাজ গজিয়েছে। আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই এ দেশে আর চাঁদাবাজি চলবে না। চাঁদাবাজরা আর যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
আতিকুর রহমান আরও বলেন, বিগত ৫৩ বছরে শ্রমিকরা কোন কল্যাণই পায়নি। এখন এমন একটা সংস্কার জরুরী যাতে শ্রমিকদের আর নিপীড়িত হতে না হয়, বিনা চিকিৎসায় যেন তাদের মরতে না হয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিগত সময়ে যে সকল শ্রমিক হত্যা হয়েছে সে গুলোর তদন্ত করে বিচারের দাবি জানাই।
নোয়াখালী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. রেজওয়ানুল হকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর নোয়াখালী জেলা আমির মাওলানা ইসহাক খন্দকার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুস সালাম, চট্টগ্রাম মহানগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের আমির এএসএম লুৎফুর রহমান প্রমুখ।
এসময় নোয়াখালী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা নিজাম উদ্দিন ফারুক, মাওলানা সাইয়েদ আহাম্মদ, সেক্রেটারি মাওলানা বোরহান উদ্দিন, ছাত্রশিবির নোয়াখালী শহর সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান আরমানসহ জামায়াতের নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন ইউনিটের কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদক/নতুনদেশ/জেএফ/.