নোয়াখালী-৫
মওদুদের আসনে বিএনপির ‘সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত’ নিয়ে বিতর্ক
বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নিজ এলাকা নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে দলের ‘সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত’ পদ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। গত সোমবার (১৯ মে) দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে জেলা কমিটির বৈঠকের পর থেকে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ নিজেকে নোয়াখালী-৫ আসনের ‘সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত’ দাবি করে এলাকায় দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন ইউনিয়নে উঠান বৈঠকসহ সভা-সমাবেশ করে দলের একটি পক্ষ নিয়ে আলাদা গ্রুপ তৈরি করেন।
নেতাকর্মীরা জানান, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা নিয়ে এ আসনটি গঠিত। এখানে দীর্ঘদিন বিএনপির নেতৃত্ব দিয়ে আসেন বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। ২০২১ সালের ১৬ মার্চ তিনি মারা যাওয়ার পর এখানে বিএনপির হাল ধরেন ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি মো. ফখরুল ইসলাম।
সোমবারের (১৯ মে) বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জেলা বিএনপিকে গতিশীল করার লক্ষ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিয়ে জেলা নেতাদের সঙ্গে স্কাইপিতে বৈঠক করেন। এতে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম হায়দার ‘সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত’ পদবী নিয়ে তারেক রহমানকে প্রশ্ন করলে এ নিয়ে তিনি নেতিবাচক মন্তব্য করেন।
পরে মঙ্গলবার (২০ মে) এ নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক কাজী ইমদাদুল হক তানিম তার ফেসবুকে লিখেন- ‘এখন থেকে নোয়াখালী-৫ আসনের সাংগঠনিক অভিভাবক শুধুমাত্র জেলা বিএনপি-এক ভিডিও আলোচনায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়া জেলা বিএনপির কমিটিতে আরো কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।’
মো. সোহেল রানা নামে একজন লিখেছেন, ‘নোয়াখালীর কবিরহাট-বসুরহাটের মানুষকে বলছি, লিখিত কোন সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়নি কারো কাছে শুধু শুধু আমরা পাগল হয়ে গেছি। গত ১৯ মে তারেক রহমান ভাই সরাসরি বলে দিয়েছে এ এলাকার দায়িত্ব জেলা বিএনপির কাছে।’
তবে বিএনপির সহ-পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ বলেন, গত ৩ অক্টোবর স্কাইপি মিটিংয়ে কোম্পানীগঞ্জ বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের সামনে সাংগঠনিক দায়িত্বের বিষয়টি নেতা (তারেক রহমান) আমাকে বলেছেন। এখন ওই পদ না থাকার কথা দলের দায়িত্বশীল কেউ এখনো আমাকে জানায়নি।
জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম হায়দার বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন নোয়াখালী-৫ আসনের কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট এলাকার বিএনপির দেখভাল করবে জেলা কমিটি। এখানে সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত বলতে কোন পদ নেই। কাউকে এ ধরনের দায়িত্বও দেওয়া হয়নি।
জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জাকারিয়া বলেন, দলের কেন্দ্র জেলাকে এবং জেলা উপজেলাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। মাঝখানে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদককে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কোন পদ-পদবী আছে বলে আমার জানা নেই। বৈঠকে বিষয়টি জানার পর আমাদের নেতা তারেক রহমান উষ্মা প্রকাশ করেছেন।
কমেন্ট বক্স