প্রশাসনে আসছে বড় পদোন্নতি
আপলোড সময় :
১০-১২-২০২৪ ০৮:১৭:৫৭ অপরাহ্ন
নতুন দেশ ডেস্ক :
চলতি সপ্তাহেই প্রশাসনে উপসচিব থেকে যুগ্ম সচিব ও সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে বড় পদোন্নতি হতে যাচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।
জানা গেছে, উপসচিব থেকে যুগ্ম সচিব ও সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতির যোগ্য কর্মকর্তাদের খসড়া তালিকা প্রস্তুতির কাজ সংশ্লিষ্ট শাখা শেষ করেছে। এখন সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) সময় নির্ধারণ করে দিলে এ-সংক্রান্ত সভা আহ্বান করা হবে। সভায় পদোন্নতি প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।
এবার পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনের ২৪ ব্যাচের উপসচিব পদের কর্মকর্তাদের যুগ্ম সচিব ও ৩০ ব্যাচের সিনিয়র সহকারী সচিব পদের কর্মকর্তাদের উপসচিব পদে পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা হবে।
তবে এবারই প্রশাসন ক্যাডার পদের বাইরে অন্য ক্যাডার পদ থেকেও কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য একই সভায় বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। এর আগে সাধারণত প্রশাসন ক্যাডার ও অন্য ক্যাডার পদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এসএসবির ভিন্ন ভিন্ন সভায় বিবেচনা করা হয়েছে।
ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির জন্য প্রশাসন ও অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাসহ প্রায় ৫৭২ জন কর্মকর্তা ও সিনিয়র সহকারী পদ থেকে উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৩২৯ জন ও অন্য ক্যাডার থেকে ২২৩ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়ার জন্য এবার বিবেচনায় নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই কর্মকর্তা জানান, আসন্ন সভায় এর আগে পদোন্নতি বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তাদেরও পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় নেওয়া হবে। যেহেতু এবার একসঙ্গে প্রশাসন ক্যাডারের পাশাপাশি অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতির বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে, তাই সব ক্যাডার কর্মকর্তাদের তালিকা একসঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। এসএসবি কমিটি পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের তালিকা চূড়ান্ত করে দিলেই তালিকা প্রকাশ করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
পদোন্নতিযোগ্য এসব কর্মকর্তা অনেক আগেই পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করলেও রাজনৈতিক বিবেচনায় এসব কর্মকর্তাকে দীর্ঘদিন পদোন্নতিবঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এবার পদোন্নতি দেওয়া হলে এই পদেই অনুমোদিত পদ থেকে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তা থাকবেন অনেক বেশি।
অনেক কর্মকর্তাই আলোচনাকালে জানান, পদোন্নতি পেলেও এসব কর্মকর্তার অনেকেই নির্ধারিত ডেস্ক ও দায়িত্ব পাননি এখনো। এমনও অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা ঊর্ধ্বতন পদে পদোন্নতি পেলেও দায়িত্ব পালন করছেন নিম্নতম পদে। এর বাইরে পদমর্যাদা অনুযায়ী উপযুক্ত পরিসরের কক্ষ না পেয়ে একটি কক্ষকে ভাগাভাগি করে অন্য কর্মকর্তার সঙ্গে স্বল্প পরিসরের কক্ষে দায়িত্ব পালনের অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সবাই পদোন্নতি চান। কিন্তু সচিবালয়ের স্বল্প পরিসরের কোনো কক্ষে বসার ব্যবস্থা হলে আবার সমালোচনা হয়। আসলে প্রশাসনে অপ্রাপ্তির অভিযোগ বহুদিনের। সব অভিযোগই একবারে সমাধান করা কোনো সরকারের পক্ষেই সম্ভব নয়। এটাও কর্মকর্তাদের বিচেনায় রাখা উচিত বলে মনে করেন ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা।
সবশেষ চলতি বছর গত আগস্টে ২০০ উপসচিব পদের কর্মকর্তাকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দিয়েছে সরকার। তাছাড়া এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে অন্য ক্যাডার পদের কর্মকর্তাসহ ২৩১ জন কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রশাসনে যুগ্ম সচিবের অনুমোদিত পদ প্রায় ৫০০টি। এসব পদে কর্মরত আছেন ৮৫৬ জন কর্মকর্তা। এ ছাড়া সুপারনিউমারারি পদসহ প্রশাসনে উপসচিবের অনুমোদিত পদ আছে ১ হাজার ৪২৮টি। কর্মরত আছেন ১ হাজার ৫৯৩ জন কর্মকর্তা।
‘সরকারের উপসচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা, ২০০২’-এ বলা হয়েছে, যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তা ও ৩০ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডারের উপসচিব পদে কর্মরতদের বিবেচনায় নিতে হবে। উপসচিব পদে কমপক্ষে ৫ বছর চাকরিসহ সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের সদস্য হিসেবে কমপক্ষে ১৫ বছর বা উপসচিব পদে কমপক্ষে ৩ বছর চাকরিসহ ২০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন, বলা হয়েছে বিধিতে।
একই বিধিমালায় উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৭৫ শতাংশ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাকে বিবেচনায় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পাঁচ বছর চাকরিসহ কমপক্ষে ১০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য বিবেচনা করার কথা বলা হয়েছে।
জানা গেছে, পদোন্নতি হলেও পদোন্নতি পাওয়া বেশির ভাগ যুগ্ম সচিবকে আগের কর্মস্থলে ইনসিটু হিসেবে থাকতে হবে। এমনিতেই বর্তমানে অনুমোদিত পদ থেকে একই পদের কর্মকর্তা রয়েছেন অনেক বেশি। ফলে এসব কর্মকর্তার অনেকেই নিচের পদে কাজ করছেন। তাই পদোন্নতি পাওয়া অনেক কর্মকর্তাকেই ইনসিটু হিসেবে আগের কর্মস্থলেই থাকতে হবে।
কমেন্ট বক্স